ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন বনগাঁর দম্পতি, খিদে মেটাতে হাজির ‘খুশির ঝুড়ি’

খিদের জ্বালা বড় জ্বালা, কথাতেই রয়েছে। এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা দু’বেলা খেতে পাওয়া তো দূর, একবেলাও তাদের ঠিকমতো খাবার জোটে না। এবার সেই সমস্ত মানুষের মুখে একটু খাবার তুলে দিতে উদ্যোগ নিলেন এক দম্পতি।

ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে এবার হাজির ‘খুশির ঝুড়ি’। নানান ব্র্যান্ডের নানান ধরণের বিস্কুট রাখাব রয়েছে সেই ঝুড়িতে। খিদের জ্বালায় যখন মানুষগুলো অসহায় বোধ করেন, তখন এই ঝুড়ি থেকে বিস্কুটের প্যাকেট তুলে খেয়ে খিদের জ্বালা মেটাতে পারেন তারা। তাদের হাতে এই বিস্কুটের প্যাকেট তুলে দেন প্রিয়া নাথ। ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর পেট ভরলে দু’হাত তুলে প্রিয়াদেবীকে আশীর্বাদও করে যান তারা। প্রিয়াদেবী ও তাঁর স্বামী তাদের ফের আসার জন্য আহ্বানও জানান।

বনগাঁ চম্পক মোড়ে একটি দোকান রয়েছে নাথ দম্পতির। এর পাশাপাশি ওম ডেলিভারির ব্যবসাও রয়েছে তাদের। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে দোকান সামলাতেন প্রিয়াদেবী। এই সময় তিনি দেখতেন অনেক মানুষই খিদের জ্বালায় দোকানে এসে খাবার চাইছেন। তিনি সাধ্যমতো তাদের হাতে খাবার তুলে দিতেন।

কিন্তু যারা লজ্জায় খাবারটুকুও চাইতে পারেন না, তাদের কী হবে? সেই ভাবনা থেকেই নিজেদের দোকানের সামনে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন নাথ প্রিয়াদেবী। আর সেই বোর্ডের সামনে রাখা একটি ঝুড়ি। তাতে রাখা বিস্কুট। এই ঝুড়ির নাম দেন ‘খুশির ঝুড়ি’। সেখান থেকে খাবার নেওয়ার জন্য বহু মানুষ ভিড় জমান। প্রিয়া দেবীর কথায়, ‘‘খিদের জ্বালা জানি আমি। তাই যাঁদের খাওয়া জোটে না, রোজ তাঁদের জন্য এইটুকু ক্ষুন্নিবৃত্তির আয়োজন করি সাধ্যমতো”৷

স্ত্রীর এই কাজে সবসময় তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছেন তাঁর স্বামী সুব্রত নাথ। তাঁর কথায়, “এই চিন্তাভাবনা ওরই। অনেকেই দোকানে এসে খাবার নিয়ে যান”। সুব্রত জানান যে তাদের এই উদ্যোগে অনেকেই তাদের সঙ্গী হয়েছেন। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি খাবার কিনে এই ঝুড়িতে রাখতে চান, তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন নাথ দম্পতি।

প্রিয়াদেবীর দোকান থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিস্কুটের ঝুড়ি নেয় সিন্টু৷ তার বয়স পাঁচ বছর। বাবা নেই তার। মা স্টেশনে ভিক্ষা করেন। প্রতিদিন সকালে ঝুড়ি থেকে বিস্কুট তুলে খায় সে৷ ভালোবাসে কমলা ক্রিম দেওয়া বিস্কুট।

Back to top button