এক সময় শিয়ালদহের স্টেশনে কাটিয়েছেন রাত! এখন তার দেখা পেতেই বাড়ির সামনে উপচে পড়ে ভিড়! কেমন ছিল দীপা ওরফে স্বস্তিকা ঘোষের অভিনয়ের যাত্রা?

Swastika Ghosh Life Struggle: অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নেই পরিবারের কেউ। কলকাতার থেকে বহু দূরে মথুরাপুরের এক মধ্যবিত্ত বাড়িতে কাটিয়েছে ছোটবেলা। স্বপ্ন দেখতেন অভিনেত্রীর হওয়ার। চোখে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই একদিন বিভিন্ন চ্যানেলে ইমেল করেন অভিনেত্রী। লিখেছিলেন অভিনয় করতে চান। সেই থেকেই শুরু। কিভাবে স্বস্তিকা ঘোষ হয়ে উঠলেন সকলেরই পছন্দের দীপা? সংবাদ মাধ্যমে নিজের অভিনয়ের সফরের কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ (Swastika Ghosh)

অভিনয়ের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সম্পর্ক ছিলনা! কিভাবে অভিনয় জগতে পা রাখলেন স্বস্তিকা?

অভিনেত্রী জানিয়েছেন বাবা মা দুজনেই যুক্তি ছিলেন গানের সঙ্গে। তিনি নিজেও গান জানতেন, ক্লাস ৭-৮ নাচও শিখেছিলেন। স্কুল এবং নানা অনুষ্ঠানে অভিনয় করছেন। তখনই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে তার। বাবা মা আপত্তি করেননি কখনও। তারপরই অভিনয়ের টানে নানা চ্যানেলে নিজের আইডি জমা দেন আপনাদের প্রিয় দীপা ওরফে স্বস্তিকা। “আমার ইচ্ছা ছিল স্কুলের পড়া শেষ করে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হব, সুযোগও পেছিলাম তবে মুখ্য চরিত্র নয়, হিরোর বোনের চরিত্র। কিন্তু বাদ সাধল করোনা। তখন ট্রেন বন্ধ হওয়ার কারণে প্রথম কয়েকদিন গাড়ি ভাড়া করে যেতাম। বাড়িতেও সমস্যার স্মৃতি হত। এতদূর থেকে যাওয়া আসা আমার পক্ষে সহজ ছিল না। অডিশনে পর সিরিয়ালে চান্স পেলাম। কিন্তু অনেকটা দূর হওয়ার কারণে কলটাইমে পৌঁছাতে পারতাম না। রোজ দেরি হয়ে যেত। আর ফিরতেও অনেকটা দেরি হত।”

শিয়ালদহের স্ট্রেশনে কাটিয়েছেন রাত! কাজের তাগিদে একা থাকতে হয়েছে কলকাতায় জানালেন স্বস্তিকা ঘোষ

অভিনেত্রী বলেছেন “একদিন শিয়ালদহ স্টেশনে এসে দেখি শেষ ট্রেন চলে গেছে। সেইদিন সারারাত শিয়ালদহ স্ট্রেশনে কাটিয়ে পরেরদিন সেখান থেকে আবার সেটে চলে গেছি। গোটা ফ্লোর আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকত আমার খুব খারাপ লাগত। অনুরাগের ছোঁয়া আমার তৃতীয় কাজ। এটা আমার ক্যারিয়ারের একটা বড় ব্রেক। এতদিনে ছোট ছোট চরিত্র করার বাড়ি থেকে যাতায়াত করতে পারতাম। কিন্তু অনুরাগের ছোঁয়ায় সুযোগ পাওয়ার পর সেটা আর হয়নি। কলকাতায় একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। একা থাকতে খুব কান্না পেত। যদিও ভাইয়ের পরীক্ষা হওয়ার পর বাবা মাও ভাইকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসে। ভাই কলকাতার স্কুলে ভর্তি হয়, আমিও উচ্চমাধ্যমিক দিই। যদিও আর পড়াশোনা করা হয়নি। এটাতেই মন দিয়েছি।”

মথুরাপুরে নিজের শিকড়ে ফিরে যান যাওয়ার পর কেমন প্রতিক্রিয়া পান সকলের স্বস্তিকা?

অভিনেত্রীর মতে,“এখন গেলে সবাই বাড়ির সামনে ভিড় করে দীপা এসেছে, দীপাকে দেখব বলে যেন আগে আমায় দেখেছি। এটা খুব ভালো লাগে। সকলের এত ভালোবাসা পাই। সেটাই বড় পাওনা। এসব দেখলে মনে হয় আরও ভালো করে কাজ করতে হবে। আমি চিরকাল নিজের কাজটা ভালো করে করতে চেয়েছিলাম। এখন যদি কোন মুহুর্তে হাঁফিয়ে উঠে তখন মনে হয় এটাই শুরু। এইভাবেই সারাজীবন কাজ করতে হবে। সকলের ভালোবাসাই আমার কাছে সব।”

আরও পড়ুন: স্রোতকে মন দিয়ে ফেলল সার্থক! স্যারের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে দারুণ খুশি হল স্রোত! নতুন জুটির মধ্যে খেলে গেল ভালোবাসার স্রোত!

ইন্ডাস্ট্রিতে স্বস্তিকার ছিল না কোন “গড ফাদার” সমস্যা হয়েছিল কখনও?

অভিনেত্রীর কথায়, তিনি কাজ শিখছেন এখনও। এটা তার অভিনয় জীবনে শুরু। অনুরাগের ছোঁয়া ২ বছর পার করেছে। সকলের সঙ্গে ভালোবাসাও পেয়েছেন অভিনেত্রী। তবে আরও ভালো কাজ করতে চান। সমস্ত রকমের চরিত্র করতে চান তিনি। ধারাবাহিকের বাইরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তিনি বলেছেন “শট শেষ হলে আমরা বসে বসে গল্প করি। আসলে দিনেই এতটা সময় একসঙ্গে কাটাই যে এটাই পরিবার হয়ে গেছে। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, কাজ, দারুণ পরিবেশ অনুরাগের ছোঁয়ার সেটে। ছুটি হলে যখন সবাই বলে বাড়ি যা। আমি বলি তোমরাই আমার বাড়ি, পরিবার, আমা বন্ধু।” আপনাদের দীপাকে কেমন লাগে?

Back to top button